Skip to main content

কম্পিউটার পেরিফেরাল

 কম্পিউটার পেরিফেরাল

কম্পিউটার পেরিফেরাল বলতে ঐ সকল হার্ডওয়্যারকে বোঝায় যেগুলো কম্পিউটারের সাথে যুক্ত থেকে কম্পিউটারের কার্যপরিধি ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

কম্পিউটার পেরিফেরালকে তিনভাগে ভাগ করা হয়-

. কম্পিউটার স্টোরেজ

. ইনপুট যন্ত্রপাতি

. আউটপুট যন্ত্রপাতি

 ইনপুট ডিভাইস

কম্পিউটারে কাজ করার জন্য যে সকল তথ্য প্রদান করা হয় তাদের বলা হয় ইনপুট। কম্পিউটারে ইনপুট প্রদানের জন্য বিভিন্ন ধরণের যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। এসকল যন্ত্রকে বলা হয় ইনপুট ডিভাইস। যেমনঃ কিবোর্ড, মাউস, স্ক্যানার, মাইক্রোফোন, জয়স্টিক, গ্রাফিক্স ট্যাবলেট, ওয়েবক্যাম, ডিজিটাল ক্যামেরা, MICR-রিডার, ওএমআর, ওসিআর, বারকোড রিডার ইত্যাদি।

কিবোর্ড

কিবোর্ড  ইংরেজি শব্দ key board থেকে এসেছে, যা এখন প্রায় বাংলা একটি শব্দ। বর্তমানে প্রচলিত কিবোর্ডগুলোতে সর্বোচ্চ ১০৫ টি কি থাকে। কিবোর্ডে বিভিন্ন ধরণের কি থাকে-

ফাংশন কী

কী বোর্ডের উপরের দিকে বাম পার্শ্বে F1 থেকে F12 পর্যন্ত(12টি ) যে কী গুলো আছে এদেরকে ফাংশন কী বলে। কোন নির্দিষ্ট কাজ করা যায় বলে একে ফাংশন কী বলে।

Function Key এর ব্যবহার সমুহঃ
কম্পিউটার কীবোর্ডের এই জাদুকরী কী গুলো সম্পর্কে আলোচনা করতে আমরা ভালই লাগবে। মূলত এই ফাংশন কী গুলো শর্টকাট কী হিসেবে সত্যি অনেক কার্যকরী। আর তাই কম্পিউটারে আপনার কাজের দক্ষতাকে বাড়িয়ে নিতে জেনে নিন কম্পিউটারে function কী গুলোর ব্যবহার।

F1 : সাহায্যকারী হেল্প লাইন গুলোর সাথে লিঙ্ক করাই হল এই ফাংশন কী এর কাজ। আপনি যখন এই ফাংশন কী প্রেস করবেন তখন একটিভ থাকা প্রোগ্রামের হেল্প পেইজ গুলো চলে আসবে।

F2 : কোন ফাইল বা ফল্ডার Rename করতে এই ফাংশন কী প্রেস করুন। এছাড়াও আপনি এম .এস. ওয়ার্ড প্রোগ্রামে Ctrl+Alt+F2 প্রেস করে নতুন ডকুমেন্ট ফাইল খুলতে পারবেন। আবার Ctrl+F2 বাটন চেপে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে প্রিন্ট প্রিভিউ দেখতে পারবেন।

F3 : এই ফাংশন কী আপনার যেকোনো একটিভ থাকা প্রোগ্রামের সার্স অপশন বা সার্স লাইন গুলোকে ওপেন করে দেয়। যেকোনো প্রোগ্রামে সার্স অপশন গুলো শর্টকাটে পেতে এই কী ব্যবহার পেস করুন। এছাড়াও আপনি এম. এস. ওয়ার্ডে Capital Latter Small Letter পরিবর্তন করার জন্য শর্টকাট কী হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

F4 : এই ফাংশন কি এম এস ওয়ার্ড প্রোগ্রামে Last Performed অর্থাৎ শেষ যে কমান্ড করা হয়েছে সেটিকে ফিরিয়ে আনে। এছাড়াও সক্রিয় থাকা সব প্রোগ্রাম কে বন্ধ করতে Alt+F4 কী ব্যবহার করতে পারবেন। আবার সক্রিয় থাকা সকল উইন্ডো গুলো বন্ধ করার জন্য Ctrl+F4 প্রেস করতে পারেন।

F5 : কম্পিউটার ব্যবহারকারী কমবেশি সকলেই এই ফাংশন কী এর কাজ সম্পর্কে জেনে থাকবেন। উইন্ডোজ Refresher করতে এই কী প্রেস করতে হয়, এটি ব্রাউজার ও Refresher করে। আবার পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড গুলো শো করতে এই শর্টকাট কী ব্যবহার করা হয়। এছাড়া মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে Fiend, Replace Go To উইন্ডো ওপেন করতে এই শর্টকাট কী ব্যবহার করতে পারেন।

F6 : এই ফাংশন কী প্রেস করে আপনি ওয়েব ব্রাউজারের সরাসরি অ্যাড্রেসবারে কার্সর নিয়ে জেতে পারবেন। এছাড়াও আপনি Ctrl+Shift+F6 প্রেস করে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে খোলা অন্য ডকুমেন্টটি সক্রিয় করা হয়।

F7 : মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে লেখা বানান ও ব্যাকারন চেক করতে এই ফাংশন কী ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও আপনি এই কী প্রেস করে Mozilla Firefox Create Browsing চালু করতে পারবেন। Shift+F7 চেপে ওয়ার্ডে কোন নির্বাচিত শব্দের প্রতিশব্দ, বিপরীত শব্দ শব্দের ধরন ইত্যাদি জানার অভিধান চালু করা হয় ।

F8 : এই ফাংশন কী অপারেটিং সিস্টেম চালু করার হওয়ার সময় কাজে লাগে। কম্পিউটারে উইন্ডোজ কে Save Mode এ চালু করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

F9 : Windows Setup দেওয়ার সময় এই কি প্রেস করে Fast Boot ডিভাইস CD Room দেখানো যায়। আবার Quark Express 5.0 এর মেজারমেন্ট টুলবার ওপেন করার জন্য এটি কাজে লাগে।

F10 : এই ফাংশন কী প্রেস করে ইন্টারনেট ব্রাউজার বা কোনো খোলা উইন্ডোর মেনুবার নির্বাচন করা হয়। আবার shift+F10 প্রেস করে কোন নির্বাচিত লেখা বা সংযুক্তি, লিংক বা ছবির ওপর মাউস রেখে ডান বাটন এ ক্লিক করার কাজ করা হয়।

F11 : কম্পিউটার স্ক্রিনে একটিভ উইন্ডোটিকে ফুলস্ক্রিন করতে এবং নরমাল মুডে আনতে এই বাটন টি প্রেস করলেই তা হয়ে যাবে।

F12 : এম. এস. ওয়ার্ডের Save as উইন্ডো খোলা হয় এই বাটন প্রেস করে। আবার Shift+F12 চেপে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ফাইল সেভ করা হয় এবং Ctrl+Shift+F12 প্রেস করে ওয়ার্ড ফাইল প্রিন্ট কমান্ড করতে পারবেন। এছাড়াও অভ্র কীবোর্ডে বাংলা ও ইংরেজি লেখা পরিবর্তন করার জন্য শর্টকাট কী হিসেবে এই বাটন প্রেস করতে পারবেন।

আলফানিউমেরিক কিঃ কিবোর্ডে অ্যালফাবেট (a-z) এবং নম্বর (0-9) দিয়ে সাজানো কি গুলোকে বলা হয় আলফানিউমেরিক কি।

নিউমেরিক কি-প্যাডঃ কিবোর্ডের ডান অংশে ক্যালকুলেটরের মতো অর্থাৎ 0-9 এবং যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ ইত্যাদি চিহ্নিত কিগুলোকে নিউমেরিক কি-প্যাড বলা হয়। ১৭ টি নিউমেরিক কি রয়েছে।

মডিফাইয়ার কিঃ কিবোর্ডের যে সকল বোতামে কোন অক্ষর বা বর্ণ টাইপ করা থাকেনা কিন্তু অক্ষর বা বর্ণ বিন্যাসের কাজ এবং অন্যান্য ধরণের কাজ করা হয় সেগুলোকে বলা হয় মডিফাইয়ার কি। যেমনঃ Shift, Option, Command, Ctrl, Alt ইত্যাদি।

কার্সর মুভমেন্ট কিঃ কিবোর্ডের ডান দিকে চারটি Arrow Key আছে। এগুলোকে কার্সর মুভমেন্ট কি বলা হয়।

কিবোর্ড বিন্যাসঃ বিভিন্ন ধরণের কিবোর্ড লে-আউট আছে। কিবোর্ডের বাম প্রান্তের উপরের ছয়টি বর্ণের ক্রম দিয়ে এই লে-আউটের নামকরণ করা হয়। যেমনঃ QWERTY layout, QWERTZ layout, AZERTY layout.

অভ্র কিবোর্ডঃ অভ্র কিবোর্ড হল বাংলা লেখার একটি মুক্ত সফটওয়্যার। এতে ফোনেটিক পদ্ধতিতে বাংলা লেখা যায়। মেহেদি হাসান অভ্র কিবোর্ড উদ্ভাবন করেন।

 মাউস

মাউস কম্পিউটার পরিচালনায় ব্যবহৃত একটি হার্ডওয়্যার। ১৯৬০ এর দশকের শেষ ভাগে স্ট্যানফোর্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ডুগ এঙ্গেলবার্ট সর্বপ্রথম মাউস আবিষ্কার করেন। কিন্তু সত্তরের দশকে এটি কেবল জেরক্সের কম্পিউটার ছাড়া অন্যত্র জনপ্রিয়তা পায় নাই। ১৯৮০ এর দশকে আ্যাপল কম্পিউটার তাদের ম্যাকিন্টশ সিরিজে প্রথম এটি উপস্থাপন করে, এর আকৃতি ইঁদুরের মত তাই এর নাম mouse দেয়া হয়েছিল। এটি একটি ইনপুট ডিভাইস, এর মাধ্যমে মনিটরের বা প্রোগ্রামের যে কোন স্থানে নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা সম্ভব। এর কল্যাণে গ্রাফিক্স ইউজার ইন্টারফেস বা GUI সম্বলিত আপারেটিং সিসটেম এত দ্রুত প্রসার পায়। এর সাহায্যে যে কাজগুলো করা যায়-

পয়েন্টিং: মাউস পয়েন্টকে মনিটর স্ক্রিনের যে কোন জায়গায় Move করানোকে পয়েন্টিং বলা হয়।

ক্লিকঃ মাউসের বাটনকে একবার ক্লিক করে ছেড়ে দেওয়াকে সিঙ্গেল ক্লিক বা শুধু ক্লিক বলা হয়।

ডাবল ক্লিকঃ মাউসের বাটন পরপর দুইবার চাপ দেওয়াকে ডাবল ক্লিক বলা হয়।

ড্র্যাগ এন্ড ড্রপঃ কোন ছবি, আইকন বা উইন্ডোকে সিলেক্ট করে মাউসের বাম বাটন চেপে ধরে টেনে আনাকে ড্র্যাগ বা ড্র্যাগিং বলে। এভাবে ড্র্যাগ করে ছেড়ে দেওয়াকে ড্রপিং বা ড্রপ বলা হয়।

সিলেক্টঃ কোন অবজেক্ট সিলেক্ট করতে হলে অবজেক্টের ডান বা বাম দিকে আই-বিম ক্লিক করে মাউসে চেপে রেখে অবজেক্টের উপর দিয়ে বাম বা ডানদিকে টেনে নিয়ে যেতে হবে। এতে টেনে নিয়ে যাওয়া অংশটুকুর উপর অন্য রঙের আচ্ছন পড়ে যাবে। একেই সিলেক্ট বলা হয়।

মাইক্রোফোন, জয়স্টিক, গ্রাফিক্স ট্যাবলেট, ওয়েবক্যাম ও ডিজিটাল ক্যামেরা

মাইক্রোফোন

মাইক্রোফোন একটি ইনপুট ডিভাইস যা শব্দ রেকর্ডিং এর জন্য ব্যবহার করা হয়। মাইক্রোফোনের মাধ্যমে শব্দ রেকর্ড হয় এবং ডিজিটাল ফরমেটে রুপান্তরের পর সাউন্ড ফাইল হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়।

জয়স্টিক

জয়স্টিক হল একটি ইনপুট ডিভাইস যতে আয়তাকার বেসের উপর একটি দন্ড বসানো থাকে। বেসের সাথে কম্পিউটারের সংযোগ থাকে। সাধারণত কম্পিউটারে গেম খেলতে জয়স্টিক ব্যবহৃত হয়। এছাড়া ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও বিভিন্ন ধরণের সিমুলেশনের কাজেও জয়স্টিক ব্যবহৃত হয়।

গ্রাফিক্স ট্যাবলেট

গ্রাফিক্স ট্যাবলেট কার্যত মাউসের বিকল্প যন্ত্র। গ্রাফিক্স ট্যাবলেট দেখতে অনেকটা পেন্সিলের স্লেটের মতো। বিশেষ কলম দিয়ে স্লেট বা প্যাডের উপরে ছবি বা কোন অলঙ্করণের কাজ করা যায়।

ওয়েবক্যাম

ওয়েবক্যাম হল একটি ভিডিও ক্যামেরা যা কম্পিউটার থেকে কম্পিউটারে রিয়েল টাইম ইমেজ বা ভিডিও আদানপ্রদান করে। এর মাধ্যমে ইন্টারনেটে ভিডিও চ্যাটিং করা যায়, কম্পিউটার থেকে ভিডিও দেখে নিরাপত্তার কাজ করা যায় এবং ভিডিও রেকর্ডিং করা যায়।

ডিজিটাল ক্যামেরা

চলন্ত এবং স্থির ছবি তুলে তা কম্পিউটারে দেওয়ার জন্য ডিজিটাল ক্যামেরা ব্যবহৃত হয়। ডিজিটাল ক্যামেরাতে ফিল্ম থাকেনা। এতে CCD(Charge Coupled Device) নামক একটি চিপ থাকে।

 MICR-রিডারওএমআরওসিআর ও বারকোড রিডার


MICR-রিডার

MICR এর পূর্ণরূপ হল Magnetic Ink Character Recognition. যে মেশিন MICR লেখা পড়তে পারে তাকে MICR-রিডার বলে। চৌম্বক কালির সাহায্যে MICR লেখা হয়।

এই পদ্ধতিতে ব্যাংকের চেক নাম্বার লেখা ও পড়া হয়। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সকল ব্যাংকে MICR যুক্ত চেক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ওএমআর


OMR বা Optical Mark Reader এমন এক যন্ত্র যা পেন্সিল বা কালির দাগ বুঝতে পারে। পেন্সিলের দাগ বোঝা যায় পেন্সিলের সীসার উপাদান গ্রাফাইটের বিদ্যুৎ পরিবাহিতা যাচাই করে। কালির দাগ বোঝা যায় কালির দাগের আলোর প্রতিফলন বিচার করে। অবজেকটিভ প্রশ্নের উত্তরপত্র পরীক্ষাবাজার সমীক্ষাজনগণনা ইত্যাদি কাজে OMR ব্যবহৃত হয়।

ওসিআর


OCR বা Optical Character Reader শুধু দাগই বোঝেনাবিভিন্ন বর্ণের পার্থক্যও বুঝতে পারে। চিঠির পিন কোডইলেকট্রিক বিলইনস্যুরেন্স প্রিমিয়ামনোটিস ইত্যাদি পড়ার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়।

বারকোড রিডার


বারকোড রিডার একটি অপটিক্যাল ইনপুট ডিভাইস। বারকোড বলতে কমবেশি চওড়াবিশিষ্ট পর্যায়ক্রমে কতগুলো বার বা রেখার সমাহারকে বোঝায়। একে ইউনিভার্সাল প্রোডাক্ট কোডও বলা হয়। দোকান থেকে বিক্রিত জিনিসের প্যাকেটের উপর বারকোডের সাহায্যে জিনিসের নামমূল্য ইত্যাদি লেখা থাকে। অতঃপর একটি কম্পিউটার বারকোড রিডারের সাহায্যে কোডটি পড়ে তা কোন সংখ্যা বোঝায়তা জেনে নিতে পারে। কম্পিউটারের স্মৃতিতে প্রতিটি জিনিসের বারকোড নাম্বার ও দাম রক্ষিত থাকে। এ থেকে কম্পিউটার বিক্রিত জিনিসের নাম ও দাম রক্ষিত থাকে। এ থেকে কম্পিউটার বিক্রিত জিনিসের নাম ও দাম লিখে বিল তৈরি করে এবং সাথে সাথে বিক্রিত জিনিসের স্টক আপডেট করে।

QR CODE


QR Code সম্পুর্ন রুপ হচ্চে Quick Response Code । কিউ আর কোড হচ্ছে বারকোডের একটি দ্বিমাত্রিক এবং আপগ্রেড রুপ।সর্ব প্রথম জাপানে এর প্রচলন শুরু হলেও বর্তমানে বিশ্বব্যাপি একে ব্যাবহার করা হচ্ছে। কিউ আর কোডের ব্যবহার বারকোডের মতো এতো সীমিত পরিসরে নয়, এর ব্যবহার অনেক বিস্তৃত। বার কোডে যেখানে কেবলমাত্র সংখ্যা ও হাতে গোনা কিছু আসকি ক্যারেকটার নিয়ে কাজ করে, সেখানে কিউ আর কোড সাপোর্ট করে ৪ হাজারেরও বেশি ইউনিকোড ক্যারেক্টার! যার অর্থ শুধুমাত্র প্রোডাক্ট আইডেন্টি বা সংখ্যা ভিত্তিক কোন কিছু নয়, বরং যে কোন ধরণের শব্দ এতে ব্যবহার করা সম্ভব।আর এ কারণেই কিউ আর কোডের ক্ষেত্র বিস্তৃতি হয়েছে ব্যাপকহারে। শুধু মাত্র লেনদেন বা ব্যবসায়িক কাজেই নয়,  বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ব্যবহার করা যাবে।

আউটপুট ডিভাইস

কম্পিউটারের কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট প্রাপ্ত ইনপুটকে ব্যবহারকারীর দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী প্রক্রিয়াকরণের কাজ সম্পন্ন করে। প্রক্রিয়াকরণের কাজ সম্পন্ন হলে তার ফল পাওয়া যায়। একে বলে আউটপুট। প্রক্রিয়াকরণের পর যে সকল যন্ত্রের সাহায্যে ফল পাওয়া যায় তাদেরকে বলা হয় আউটপুট ডিভাইস। যেমনঃ মনিটর, প্রিন্টার, স্পিকার, প্রোজেক্টর, প্লটার হেডফোন ইত্যাদি।

মনিটর

মনিটর এক ধরণের আউটপুট ডিভাইস যার মাধ্যমে টেলিভিশনের মতো লেখা বা ছবি দেখা যায়। মনিটর সাধারণত তিন ধরণের হয়ে থাকে-

. সিআরটি মনিটর

. এলসিডি মনিটর

. এলইডি মনিটর

 সিআরটি মনিটরঃ CRT এর পূর্ণরূপ হলো Cathode Ray Tube. ক্যাথোড রে টিউবযুক্ত মনিটরকে সিআরটি মনিটর বলা হয়। টিউবের ভেতর দিকে ফসফর নামক এক ধরণের রাসায়নিক পদার্থের প্রলেপ থাকে। সাদাকালো সিআরটি মনিটরে একটি ইলেকট্রন গান থাকে এবং রঙিন মনিটরে তিনটি মৌলিক রঙ (লাল, সবুজ, আসমানি) প্রদর্শনের জন্য তিন ধরণের ইলেকট্রন গান থাকে। আকারে অপেক্ষকৃত বড় এবং বিদ্যুৎ খরচ বেশী হওয়ায় মনিটরগুলোর ব্যবহার দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে।

এলসিডি মনিটরঃ LCD এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Liquid Crystal Display. কম্পিউটারে ব্যবহৃত এক ধরণের ডিসপ্লে ইউনিট। একে ফ্ল্যাট প্যানেল মনিটরও বলা হয়। ক্যালকুলেটর, ডিজিটাল ঘড়ি, ল্যাপটপ কিংবা নোটবুকে এ ধরণের মনিটর ব্যবহৃত হয়।

এলইডি মনিটরঃ LED এর পূর্ণ রূপ হলো Light Emitting Diode. এটি LCD মনিটরের মতোই কাজ করে কিন্তু এর ব্যাকলাইট ভিন্ন ধরণের। LCD মনিটর অপেক্ষা ডিসপ্লে কোয়ালিটি ভালো মানের এবং বিদ্যুৎ খরচ ৪০% কম। তৈরি করার সময় LCD মনিটরের মতো মারকারি ব্যবহার করা হয় না বলে এটি বেশী পরিবেশবান্ধব।

 

ভিডিও কন্ট্রোলার, পিক্সেল, রেজুলেশন ও রিফ্রেস রেট

ভিডিও কন্ট্রোলারঃ মনিটরের পর্দায় কোন ছবি, লেখা বা টেক্সট প্রদর্শনের জন্য কম্পিউটার একটি ইন্টারফেস ব্যবহার করে, যাকে ভিডিও কন্ট্রোলার বলা হয়। এটি প্রসেসর থেকে প্রাপ্ত সিগন্যাল যথাযথভাবে রুপান্তর করে প্রদর্শনের জন্য মনিটরে পাঠায়। নিচে কিছু জনপ্রিয় ভিডিও কন্ট্রোলারের নাম

VGA (Video Graphics Array), 

SVGA (Super Video Graphics Array), 

XGA (Extended Graphics Array) ইত্যাদি।

পিক্সেলঃ কম্পিউটারে তথ্য প্রদর্শনের ক্ষুদ্রতম একক হচ্ছে পিক্সেল। এই শব্দটি ইংরেজি Picture Element এর সংক্ষিপ্ত রূপ। পিক্সেল হচ্ছে ডেটা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত মাধ্যমের ক্ষুদ্রতম এলাকা যার বর্ণ এবং উজ্জ্বলতা স্বতন্ত্রভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

রেজুলেশনঃ ডিসপ্লে পর্দা বা স্ক্রিনে প্রদর্শিত ছবির সূক্ষ্মতাকে রেজুলেশন বলে। স্ক্রিনের প্রতি ইঞ্চিতে যত বেশী পিক্সেল থাকবে তত বেশী সূক্ষ্ম হবে।

রিফ্রেস রেটঃ রিফ্রেস রেট হল পিক্সেলের উজ্জ্বলতা ঠিক রাখার জন্য প্রতি সেকেন্ডে পিক্সেলগুলো কতবার রিচার্জ হয় তার সংখ্যা। Refresh Rate যত বেশী হবে ইমেজ স্ক্রিনে তত বেশী দৃঢ় দেখাবে। Refresh Rate কে হার্টজ এককে প্রকাশ করা হয়।

প্রিন্টার

যে যন্ত্রের সাহায্যে কম্পিউটারে প্রাপ্ত ফলাফল কাগজে ছাপানো যায়, তাকে প্রিন্টার বলা হয়। প্রিন্টারের মান কি রকম হবে তা নির্ভর করে প্রিন্টারের রেজুলেশনের উপর। প্রিন্টারের রেজুলেশন পরিমাপের একক DPI. DPI এর পূর্ণরূপ হল Dots Per Inch. কার্যপ্রণালী অনুসারে প্রিন্টারকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা যায়-

. ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার

. নন-ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার

. ইমপ্যাক্ট প্রিন্টারঃ যে প্রিন্টারে প্রিন্টহেড যে কাগজে ছাপা হয় তাকে স্পর্শ করে, তাকে ইমপ্যাক্ট প্রিন্টার বলা হয়। ধীরগতি সম্পন্ন এ সকল প্রিন্টারের ছাপা সাধারণ মানের এবং প্রিন্ট এর সময় বিরক্তিকর শব্দ হয়। একে দুভাগে ভাগ করা হয়-

) লাইন প্রিন্টারঃ লাইন প্রিন্টারে প্রতিবারে একটি সম্পূর্ণ লাইন ছাপা হয়। এগুলো ইমপ্যাক্ট প্রিন্টারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগতির। লাইন প্রিন্টার প্রতি মিনিটে ২০০ থেকে ৩০০০ লাইন ছাপাতে পারে। লাইন প্রিন্টারকে আবার দুইভাগে ভাগ করা হয়- চেইন প্রিন্টার ও ড্রাম প্রিন্টার।

) সিরিয়াল প্রিন্টারঃ সিরিয়াল প্রিন্টার টাইপ রাইটারের মতো একবারে মাত্র একটি বর্ণ ছাপা হয়। এগুলো ধীরগতি সম্পন্ন। সিরিয়াল প্রিন্টারকে দুইভাগে ভাগ করা হয়-

i) ডট ম্যাট্রিক্স প্রিন্টারঃ আয়তাকারে সাজানো কতকগুলো বিন্দুকে ডট ম্যাট্রিক্স বলে। যেমনঃ বিন্দুগুলো ৮টি সারি ও এবং ১২টি স্তম্ভে সাজানো থাকলে তাকে বলে ৮X১২ ডট ম্যাট্রিক্স। এই বিন্দুগুলোর মধ্যে কিছু বিন্দু নির্বাচন করে যে কোন বর্ণ ফুটিয়ে তোলা যায়। ডট ম্যাট্রিক্স প্রিন্টারে লেখার জন্য ছোট পিনে গ্রিড ব্যবহার করা হয়। অনেকগুলো পিনের মাথা রিবনের উপর আঘাত করে কাগজের উপর বিন্দু বসিয়ে অক্ষর তৈরি করা হয়। সাধারণত এই প্রিন্টারে ৭, ৯অথবা ২৪ পিন থাকে, যেগুলো লাইন বরাবর চলাচল করে বিন্দুর মাধ্যমে অক্ষর তৈরি করে। এ প্রিন্টারে ছাপা অক্ষর বা প্রতীক সূক্ষ্ম হয় না। এর গতি পরিমাপ একক cps (characters per second).

ii) ডেইজি হুইল প্রিন্টারঃ ডেইজি হুইল প্রিন্টারে একটি চ্যাপ্টা চাকার সঙ্গে সাইকেলের স্পোকের মতো অনেকগুলো স্পোক লাগানো থাকে। প্রতিটি স্পোকের মাথায় একটি বর্ণ এমবস করা থাকে। স্পোকগুলোসহ চাকাকে একটি ডেইজি ফুলের মতো দেখতে বলে এর এই নাম।

. নন-ইমপ্যাক্ট প্রিন্টারঃ যে প্রিন্টারে প্রিন্টহেড যে কাগজে ছাপা হয় তাকে স্পর্শ করেনা তাকে নন-ইমপ্যাক্ট প্রিন্তার বলা হয়। উচ্চগতিসম্পন্ন এ সকল প্রিন্টারের ছাপা উচ্চমানের এবং প্রিন্ট এর সময় কোন বিরক্তিকর শব্দ হয় না। যেমনঃ ইংকজেট প্রিন্টার, লেজার প্রিন্টার ইত্যাদি

ইঙ্কজেট প্রিন্টারঃ ইঙ্কজেট প্রিন্টারে কতগুলো নোজল দিয়ে বৈদ্যুতিক চার্জযুক্ত তরল কালি কাগজের দিকে স্প্রে করা হয়। একটি তড়িৎক্ষেত্র এ চার্জযুক্ত কালির সূক্ষ্মকণাগুলোকে ঠিকমতো সাজিয়ে দিয়ে কাগজের উপর কোন বর্ণ ফুটিয়ে তোলে। যেমনঃ Cannon Bubble jet, HP Deskjet, Epson Stylus ইত্যাদি।

লেজার প্রিন্টারঃ লেজার প্রিন্টারে লেজার রশ্মির সাহায্যে কাগজে লেখা ফুটিয়ে তোলা হয়। লেজার প্রিন্টার মুদ্রণের জন্য লেজার রশ্মি একটি আলোক সংবেদনশীল ড্রামের উপর মুদ্রণযোগ্য বিষয়ের ছাপা তৈরি করে। তখন লেজার রশ্মির প্রক্ষেপিত অংশ টোনার আকর্ষণ করে। কাগজের উপর পতিত টোনার উচ্চতাপে গলে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসে যায়।এভাবে লেজার প্রিন্টারে মুদ্রণের কাজ সম্পন্ন হয়। একে পেজ প্রিন্টারও বলা হয়। 

যেমনঃ HP Laserjet, Samsung ML-2010, Canon LBP 3500 ইত্যাদি।

 ইনপুট আউটপুট ডিভাইস

বর্তমানে মোবাইল,কম্পিউটার ,ট্যাব ইত্যাদিতে ব্যবহৃত টার্চ স্ক্রিন ইনপুট -অউটপুট উভয় হিসাবে কাজ করে।

মোবাইল ফোন তৈরী হয়েছিলো অনেক পূর্বে কিন্তু মোবাইলে টাচস্ক্রিন যুক্ত হয় ১৯৯২ সালে। এটি মোবাইলের দুনিয়ায় নতুন যুগের সূচনা করে। টাচস্ক্রিন প্রদর্শন পর্দা হলেও এটি স্পর্শ পর্দা হিসাবে কাজ করে। এটি সেন্সর বা সংবেদনশীল পর্দা, এটি একটি ইনপুট ডিভাইস হিসাবে কাজ করে। এই টাচস্ক্রিন এর উপর আঙুলের প্রিন্ট, নখ, কিছু ক্ষেত্রে ইশারায় ও কাজ করে। অনেক ধরনের টাচস্ক্রিন থাকলে ও বর্তমানে দুটি টাচস্ক্রিন বেশী ব্যবহৃত হয় তা হলো রেজিস্টিভ ও ক্যাপাসিটিভ। মোবাইলে বেশী ব্যবহৃত হয় ক্যাপাসিটিভ টাচ স্ক্রিন।



Comments

Popular posts from this blog

আইসিটি বইয়ের বুলিয়ান আলজেব্রা আবিষ্কার সাল জটিলতা

  এইচ এস সি আইসিটি বইয়ের বুলিয়ান আলজেব্রা আবিষ্কার সাল জটিলতা  শুরুতেই জর্জ বুলি সম্পর্কে কিছু কথা  জর্জ বুল (ইংরেজি: George Boole) (২রা নভেম্বর, ১৮১৫—৮ই ডিসেম্বর, ১৮৬৪) ছিলেন , একজন ব্রিটিশ গণিতবিদ ও দার্শনিক যাকে গাণিতিক যুক্তিবিজ্ঞানের (mathematical logic) জনকদের একজন হিসাবে গণ্য করা হয়। ১৮৫৪ সালে তার প্রধান কাজ Investigation of the Laws of Thought বের হয়। তিনি যে প্রকার প্রতীকী যুক্তিবিজ্ঞান নির্মাণ করেন, তার উপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে বুলিয়ান বীজগণিতের গবেষণা শুরু হয়। বর্তমান সময়ের কম্পিউটিং এবং বীজগণিতে এই বুলিয়ান বীজগণিতের গুরুত্ব রয়েছে। বুল, ডি মরগান এবং অন্যান্যদের কাজ আধুনিক বিধিগত বীজগণিতের নির্মাণে সাহায্যকারী ভূমিকা রাখে। প্রকৌশলী মুজিবুর রহমান স্যারের বইয়ে লিখা আছে জর্জ বুলি সর্বপ্রথম ১৮৪৭ সালে বুলিয়ান আলজেব্রা নিয়ে আলোচনা করেন। ( রেফেরেন্সঃ প্রথম প্রকাশনী - ১ জুলাই , ২০১৩ ইং ও পুনঃমুদ্রন ১ জানুয়ারী ২০১৪ এর ১২৯ পৃষ্টায় আছে ) অক্ষর পত্র প্রকাশনীর বইয়ে আছে ১৮৫৪ সাল জর্জ বুলি প্রতীকী যুক্তি নামে এই বীজগণিত আলোচন...

stdio.h বা হেডার ফাইল কী এবং কেন? /conio.hকী? কেন? কখন?

প্রথমে stdio.h নিয়ে কিছু কথা,  stdio এর মানে হলো Standard input and output ।  এটি সি (C)এর একটি স্ট্যান্ডাড লাইব্রেরি যাতে ইনপুট ও অউটপুট ফাংশন গুলা বর্ণিত আছে।যেমন sacnf(),printf())। এই সকল ইনপুট ও অউটপুট ফাংশন প্রোগ্রামে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে প্রোগ্রামে এদের লাইব্রেরি হেডার ফাইলের নাম সংযোগ করতে হয়। যেমন , scanf(), printf() এই ফাংশন প্রোগ্রামে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে প্রোগ্রামর শুরুতে এদের লাইব্রেরি হেডার ফাইলের নাম stdio.h কে প্রসেসর ডিরাইভেটিভ # (হ্যাশ) দ্ধারা লিংক সেকশনে সংযোগ করতে হয় । stdio.h সংযোগ না করে scanf(), printf() ...ব্যবহার করলে প্রোগ্রামে error দেখাবে। তাই যেকোনো লাইব্রেরি ফাংশন ব্যবহার করলে তাদের হেডার ফাইলের নাম সংযোগ করতেই হবে। C programming এর আদি কম্পাইলার হচ্ছে "Turbo C". Borland সর্বপ্রথম ১৯৮৭ সালে পরিচয় করিয়ে দেন প্রথম সি প্রোগ্রামিং ভাষার Integrated Development Environment and compiler  "Turbo C".এর সাথে।    conio.h সি স্ট্যান্ডাড লাইব্রেরির কোন অংশ নয়। এটি একটি হেডার ফাইল ,যার মধ্যে getch(),clrscr() ...ইত্যাদি কিছু ফাংশন । clrscr(): এই ...

কম্পিউটারের অঙ্গ-সংগঠন

কম্পিউটারের অঙ্গ-সংগঠন ( Computer Architecture):   কম্পিউটারকে কাজের উপযোগী করার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশগুলো যথাযথ অবস্থানে স্থাপন ও যন্ত্রাংশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ স্থাপনকেই কম্পিউটারের অঙ্গ-সংগঠন বলে ।   সাধারণত কম্পিউটার সিস্টেমকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। ক) হার্ডওয়্যার , খ) সফটওয়্যার ক) হার্ডওয়্যার: কম্পিউটারের বাহ্যিক অবকাঠামো তৈরির জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র সামগ্রীকে বলে – হার্ডওয়্যার। কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থায় সকল ভৌত যন্ত্রপাতি ও ডিভাইস , কীবোর্ড , প্রিন্টার , মনিটর ইত্যাদি একত্রে হল – হার্ডওয়্যার বা যান্ত্রিক সরঞ্জাম। কর্ম কৌশলের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারের Hardware কে তিন শ্রেণীতে বিন্যস্ত করা হয়। 1. Input Device 2. CPU 3. Output Device Input Device Input Device: কম্পিউটারকে ডাটা বা নির্দেশনা প্রদানের জন্য যে সমস্ত যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ ব্যবহৃত হয় সেগুলোকে ইনপুট ডিভাইস বলে। কম্পিউটারে ব্যবহৃত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ইনপুট ডিভাইস হচ্ছে: 1. Keyboard 2. Mouse 3. Joy Stick 4. Light pen 5. Track Ball 6. Scanner 7. Graphic Tablet 8. Microphone 9. Magnetic Ink C...